শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনা ১৯৭৫ সালে, তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হত্যার পর একসময় ভারতে আশ্রয় নেন। এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা এবং বাংলাদেশের রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এখানে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:

১৯৭৫ সালের ঘটনা:
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর, শেখ হাসিনা এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা (যিনি সেই সময় বিদেশে ছিলেন) প্রাণে বেঁচে যান। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর দেশে এক অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থান ও শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। শেখ হাসিনা এবং তার পরিবার তখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন।

ভারতে পালানোর কারণ:
শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল এবং তাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ছিল। তাই শেখ হাসিনা নিরাপত্তাহীনতার কারণে ১৯৭৫ সালে ভারতে চলে যান। তিনি তখন ভারতে আশ্রয় নেন এবং সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করেন। 

ভারতে থাকার সময় শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং তার পিতার হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে বক্তব্য দেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতির পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন ছিলেন এবং সেখানে থেকে তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যান।
পরবর্তীকালে ফিরে আসা:

শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন ভারতে অবস্থান করার পর, ১৯৮১ সালে তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। বাংলাদেশে ফিরে এসে তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন। এরপর তিনি বেশ কয়েকবার প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হন এবং বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নমূলক কাজের জন্য পরিচিত হন।

তাহলে, শেখ হাসিনা ভারতের প্রতি "পালিয়ে যাওয়ার" কোনো উদ্দেশ্য ছিল না; বরং এটি ছিল জীবনের নিরাপত্তার জন্য একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, যা ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে গ্রহণ করতে হয়েছিল?